যশোর সদর উপজেলার কচুয়ায় ছাত্রলীগ কর্মী রাকিবুল ইসলাম ইমন হত্যার ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। নিহতের পিতা শাহাবুদ্দিন গাজী ১২ জনকে আসামি করে মামলাটি করেছেন। পুলিশ এই মামলায় রবিউল ইসলাম ওরফে শাহের খান (৪০) নামে এক আসামিকে আটক করেছে। বুধবার মুনসেফপুর গ্রামস্থ নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। রবিউল ইসলাম ওরফে শাহের খান মুনসেফপুর গ্রামের কওছার খানের ছেলে।
অপর আসামিরা হলেন, নিমতলী গ্রামের ইসমাইল ধাবকের ছেলে মোস্তাক হোসেন (৪০), আহমদ ধাবকের ছেলে হাফিজুর রহমান ধাবক (৪৫), মামড়াখোলা গ্রামের সাহিদ মাস্টারের ছেলে নুরে আলম সিদ্দিক পলাশ (৪৬), নিমতলী গ্রামের নিমচাঁদের ছেলে ইকরাম হোসেন (৪৮), জলিল গাজীর ছেলে ইসমাইল গাজী (৪৮), আমিন গাজীর ছেলে মোহাম্মদ গাজী (৫৫), দেয়াপাড়া গ্রামের তোরাব হোসেনের ছেলে টিটো হোসেন (৩৭), নিমতলী গ্রামের হাকিম ধাবকের ছেলে সামাদ ধাবক (৪৫), সোনাই মোল্লার ছেলে আফজাল হোসেন (৪২), চাউলিয়া গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে বাবলু বিশ্বাস (৫০) ও বাবর আলী বিশ্বাসের ছেলে ফারুক হোসেন (৪০)।
মামলায় শাহাবুদ্দিন গাজী উল্লেখ করেছেন, তার ছেলে রাকিবুল ইসলাম ইমন ইট বালুর ব্যবসায়ী ছিলেন। আসামিদের সাথে তার ছেলের এলাকায় সামাজিক অবস্থান নিয়ে পূর্ব হতে দ্বন্দ্ব চলে আসছিলো। এ কারণে আসামিরা তার ছেলেকে খুন জখমের জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইমন এবং তার সঙ্গী শাখারিগাতী গ্রামের ইসতিয়াক আহমেদ অপু, শহিদুল ইসলাম ও নরেন্দ্রপুর গ্রামের আলমগীর হোসেন বটু নিমতলী গ্রামের ইমরান হোসেনের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে মোটরসাইকেলে করে ফিরছিলেন। ইমরান হোসেনও তাদের সাথে ছিলেন। রাত ১০টার দিকে তারা টেকের বাজারে পৌঁছালে আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাদের ওপর চড়াও হন। তারা ইমরান হোসেনকে মারধর করে আটকে রাখেন। তখন ইমনসহ তার সঙ্গীরা এর প্রতিবাদ করেন এবং ইমরান হোসেনকে ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা করেন। এ সময় আসামি নুরে আলম সিদ্দিক পলাশ ও রবিউল ইসলাম ওরফে শাহের খানের হুকুমে আসামি মোস্তাক হোসেন লোহার রড দিয়ে পেছন থেকে ইমনের মাথায় আঘাত করেন। সাথে সাথে ইমন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সেই সময় অন্য আসামিরা লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। ইমনের সঙ্গীরা তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে আসামিরা তাদেরকেও মারধর করেন। পরে চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে আসামিরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান। এরপর স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। এদের মধ্যে ইমনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে তাকে ঢাকার নিউরো সাইন্স হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টার দিকে ইমনের মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, ইমনের পিতা শাহাবুদ্দিন গাজী গত মঙ্গলবার রাতে থানায় হত্যা মামলা দায়েরের পর বুধবার তদন্ত কর্মকর্তা নরেন্দ্রপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই নাজমুল হাচান এজাহারভুক্ত আসামি শাহের খানকে আটক করেছেন। তাকে মুনসেফপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।